রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৬ অপরাহ্ন
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:
ভৈরবে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ে ব্যর্থ হয়ে তিন বন্ধু মিলে সহপাঠী মোঃ ফারদিন আলম রূপক (১৬) কে গলা কেটে হত্যা করে । নিহত রূপক ভৈরব বাজারের সিমেন্ট ব্যবসায়ী মো.বিপ্লব মিয়ার ছেলে। সে এ বছর ভৈরব কেবি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।
নিখোঁজের একদিন পর আজ শুক্রবার সকালে পৌর শহরের আইডিয়াল স্কুল সংলগ্ন ব্যবসায়ী হাজী আবু বক্কর সিদ্দিকের পাঁচতলা ভবনের ছাদ থেকে খবর থানার পুলিশ বস্তাভর্তি গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে। মরদেহ উদ্ধারে সাথে সাথে ভবনের মালিক এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তিন সহপাঠীকে পুলিশের কাছে সর্পদ করে।
আটককৃতরা হলেন ভৈরব পৌর শহরের ব্যবসায়ী শাহজাহান পাটোয়ারীর ছেলে আরাফাত পাটোয়ারী, কামাল মিয়ার ছেলে ফজলে রাব্বি , ওবায়েদুল কবির খান এর ছেলে রেজাউল কবির খান। এরা চারজনই এবছর ভৈরব কেবি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করে।
স্থানীয় কাউন্সিলর মোঃ দ্বীন ইসলামকে ঘটনাটি ফোনে জানায়। হত্যাকারীদের মধ্য বিল্ডিং মালিকের নাতী ফজলে রাব্বি পিয়াল রয়েছে এবং বাকী দুজন তার বিল্ডিংয়ের ভাড়াটিয়া বলে জানায় তিনি। তারপর আতিক আহমেদ পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্হলে এসে পুলিশ নিহতের লাশ বিল্ডিয়ের ছাদ থেকে উদ্ধার করে এবং তিন বন্ধুকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর তিন বন্ধু পুলিশের কাছে রুপককে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
পুলিশ ও স্বজনরা জানায় , গতকাল বৃহস্পতিবার রাত প্রায় ৯ টার দিকে আরাফাত পাটোয়ারী তার বন্ধু রুপককে মোবাইলে জরুরী কথা আছে বলে আবুবকর সিদ্দিকের বিল্ডিং আসতে বলে। এর আগে সে তার দুই বন্ধু ফজলে রাব্বি পিয়াল ও রেজাউল কবিরের সাথে শলাপরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেয় রুপককে ডেকে এনে তার বাবার কাছে মুক্তিপনের টাকা চাইবে। এদিকে রুপক বন্ধুর ফোন পেয়ে দ্রুত ওই বিল্ডিংএ চলে আসে।
রুপক আসার পর তিন বন্ধু মিলে তাকে ঝাপটিয়ে ধরলে সে বাচাঁর জন্য চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে তাকে গলায় রশি দিয়ে পেচিয়ে ধরলে সে অজ্ঞান হয়ে যায়। তারপর ভয়ে তারা তার গলায় ছুরি চালালে সে ঘটনাস্হলেই নিহত হয়। এরপর রাতেই তিনজন মিলে বস্তায় তার লাশ ভর্তি করে ছাদে রেখে সবাই যার যার বাসায় চলে যায়। আজ সকালে বিল্ডিং মালিক লাশের গন্ধ পেয়ে ছাদে গিয়ে বস্তাটি দেখতে পেয়ে তার নাতীসহ তিনজনকে আটক করে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধারসহ তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে থানা পুলিশের কাছে তিনবন্ধুই হত্যার কথা স্বীকার করে বিস্তারিত ঘটনা জানায়।
নিহত রূপকের চাচা সজীব আহমেদ জানান, গতকাল রাত থেকে আমার ভাতিজা নিখোঁজ। অনেক খোজাখুজির পর কোথাও না পেয়ে রাত ২ টায় ভৈরব থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করি। এই হত্যার সাথে জড়িতদের অতি দ্রুত আইনের আওতায় সুষ্ট বিচারের দাবি জানান তিনি।
ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোখলেছুর রহমান জানান, মুক্তিপনের টাকা আদায়ের জন্যই তিন বন্ধু মিলে রুপককে হত্যা করে। তারা পুলিশের কাছে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে। এব্যাপারে তার পরিবার মামলা করার পর অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্হা নেয়া হবে।